বিদেশ কর্মী পাঠানোর ভুয়া প্রচারণা বন্ধে বাংলাদেশ-ইতালি একসাথে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। রবিবার (০৫ মে) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্তিনিও আলেসান্দ্রোর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত সাংবাদিকদের বলেন, একটা গোষ্ঠী যারা মানবপাচারকারী তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভুয়া প্রচারণা ছড়িয়ে মানুষকে লোভে ফেলে। মিথ্যাচার করে ভুয়া খবরের মাধ্যমে। লোভে পড়ার ফলে মানুষ ফাঁদে পড়ে অনেক সমস্যার মধ্যে পড়ে যায়, এমন কি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যতো ভুয়া প্রচারণা, ভুয়া খবর ও গুজব আছে শুধু অভিবাসনের ক্ষেত্রে নয় বরং বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ এগুলোর শিকার হয়।
আলী আরাফাত বলেন, এ বিষয়ে কীভাবে বাংলাদেশ-ইতালি একসাথে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে ইতালির রাষ্ট্রদূতের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত একমত হয়েছেন। ভুয়া প্রচারণায় মানুষ বিভিন্ন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে, সেটা অভিবাসনের ক্ষেত্রে বা অন্য যেকোনো ক্ষেত্রেই হোক। এ বিষয়ে দুই দেশ কীভাবে একসাথে কাজ করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, তাদের আইন কানুন যেগুলো আছে সেগুলো আমাদেরকে জানাবে। ভুয়া প্রচারণা বন্ধ করার জন্য আমরা যে উদ্যোগ নিবো সেগুলোতে তারা সমর্থন করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মানবপাচার ভুয়া প্রচারণার একটা ফলাফল, এর মধ্যে যাতে মানুষ না পড়ে। ভুয়া প্রচারণা শুধু রাজনীতি বা দলীয় রাজনীতির বিষয় না। সমাজের বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষ ভুয়া প্রচারণার শিকার হয়ে বিপদে পড়ে। বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে অনেক নারী-শিশু এই প্রচারণার শিকার হয়। অনেক সাধারণ মানুষ ভুয়া প্রচারণা বিশ্বাস করে অবৈধ অভিবাসনের রাস্তা বেছে নিয়ে বিপদে পড়ে। যে কারণে সঠিক তথ্যের জায়গায় বন্ধু রাষ্ট্রে এবং দেশের মধ্যে অংশীজন যারা আছেন তাদের মধ্যে একটা সমঝোতা থাকা দরকার।
তিনি আরো বলেন, ইতালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ ইতিহাস আছে। বাংলাদেশ এবং ইতালির মধ্যে চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতির অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক বিনিময়ে হতে পারে। ইতালির ভেনিস শহরে বড় ধরনের উৎসব হয়। সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে কীভাবে দেশকে তুলে ধরতে পারি সে বিষয়েও রাষ্ট্রদূত আগ্রহ দেখিয়েছেন এবং সে বিষয়ে তারা সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন।
বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অবস্থান নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ)-এর সূচক প্রকাশের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। কিন্তু এই সূচকের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যাবে যদি পদ্ধতিগত দুর্বলতা থাকে। তিনি বলেন, তাদেরকে অনুরোধ করবো যাতে বিশ্বাসযোগ্যতার স্বার্থে পদ্ধতিগত দুর্বলতা উতরে যেতে পারে এবং তথ্য নেওয়ার পর তা যাচাই করে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, আরএসএফ-এর এ বছরের প্রতিবেদন এসেছে গতবছরের কার্যক্রমের ওপর। তাদের নির্ণয় প্রক্রিয়াতে কোন পরিবর্তন আনেনি। দশ-বারো জন মানুষের মতামত নিয়ে সূচক তৈরি করলে এটা গোটা দেশের চিত্র হতে পারে না। এ মতামতগুলো কার কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে, কত জনের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে, সেখানে কারা আছে এটার কোন স্বচ্ছতা নেই। আরএসএফ’এর সূচক তৈরির পদ্ধতি খুবই দুর্বল যার মাধ্যমে প্রকৃত চিত্রের প্রতিফলন হয় না। আরএসএফ’র এ ধরণের পদ্ধতিতে গণমাধ্যম পরিবেশের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে পারছে না। এ পদ্ধতিতে গলদ আছে, ভুল আছে, সেটা আমরা তাদের কাছে তুলে ধরবো।