গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।বুধবার (১৬ জুলাই) দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত এই সহিংসতাকে ‘লজ্জাজনক’ ও ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিন্দনীয় হামলা নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই হামলায় দায়ীদের অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনতে হবে। দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে কঠোরভাবে জবাবদিহির মুখোমুখি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের ওপর এমন বর্বর সহিংসতার কোনো জায়গা থাকতে পারে না।
এতে আরও বলা হয়, আমরা সেনাবাহিনী ও পুলিশের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। পাশাপাশি হুমকি ও ভয়ভীতির মধ্যেও যারা সাহসিকতা ও অটল মনোভাব নিয়ে পদযাত্রা অব্যাহত রেখেছেন, সেই শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। এই বর্বরতার সঙ্গে জড়িতদের বিচার অবশ্যই নিশ্চিত করা হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই- বাংলাদেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। অবশ্যই ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।
গোপালগঞ্জ শহরে এনসিপির পূর্বঘোষিত সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা শহরে পদযাত্রা শুরু করলে হঠাৎ করে একদল সশস্ত্র হামলাকারী তাদের ঘিরে ফেলে। চারদিক থেকে ঘেরাও করে ভাঙচুর ও হামলার চেষ্টা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ ও সেনা সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
এর আগে সমাবেশস্থলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সমাবেশে উপস্থিত এনসিপি নেতারা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা মঞ্চে হামলা চালিয়ে সাউন্ড সিস্টেম, চেয়ার-মাইক ভাঙচুর করে। এ ঘটনাটি ঘটে পৌরপার্ক এলাকায়।
এছাড়া সকাল থেকেই গোপালগঞ্জ শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। কর্মসূচিকে ঘিরে ইউএনওর গাড়িবহরেও হামলা চালানো হয় বলে জানা গেছে। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি, এমনকি আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন গোপালগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের গণজমায়েত, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।