শুক্রবার (২৫ জুলাই) থেকে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হওয়ায় বরিশালসহ পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে আকাশপথের দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হলো। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ বিমান চলাচল শুরু হবে বলে জানা গেছে।
বিমান চলাচলের বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল বিমানবন্দরের ম্যানেজার সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বরিশাল থেকে সব ফ্লাইট বন্ধ। এ কথা বলেই তিনি লাইন কেটে দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের বরিশাল বিমানবন্দর আনুষ্ঠানিভাবে উদ্বোধনের পর থেকে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়। এরপর নানান তালবাহানায় একাধিকবার বন্ধ ছিলো এই রুটের বিমান চলাচল। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের সুবর্ণ জয়ন্তীতে ফের নিয়মিত ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। সে সময়ে বেসরকারি ইউএস বাংলা, নভোয়ার এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশ বিমান সপ্তাহে ৭ দিনই ঢাকা-বরিশাল রুটের আকাশ পথে যাত্রী পরিবহন করে। এরপর পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর যাত্রী কমেছে এমন কারণ দেখিয়ে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই রুটে ফ্লাইট চলাচল কমিয়ে সপ্তাহে তিন দিন চালু রাখা হয়।
আকাশপথে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রীরা জানান, ইতোপূর্বে বেসরকারি কোম্পানি এ রুট থেকে তাদের যাত্রী পরিবহন বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশ বিমান সপ্তাহে তিন দিন করে যাত্রী পরিবহন করায় আকাশপথে যাত্রীরা দ্রুত সময়ে ঢাকা-বরিশাল যাতায়াত করতে পারতো। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে বিমান চলাচল শুরুর দাবি জানান যাত্রীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে ফ্লাইট পরিচালনা সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, উড়োজাহাজ কম থাকার কারণে বরিশালসহ দুইটি রুটে ফ্লাইট চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। ঢাকা-বরিশাল রুটে ফ্লাইট বন্ধের চিন্তা নেই। তাই পরিচালনা করার মতো দুটি উড়োজাহাজ পেলেই এই রুটে বাংলাদেশ বিমান চলাচল শুরু হবে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ বিমানের ‘এস ২ একেডি’ নম্বরের উড়োজাহাজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সবশেষ ঢাকা থেকে ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ফের ৬৫ জন যাত্রী নিয়ে বিমানটি ঢাকায় ফিরে যায়। এই রুটে বর্তমানে কোনো বেসরকারি উড়োজাহাজও যাত্রী পরিবহন করছে না।
বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম খান রাজন জানান, বরিশাল বিমানবন্দর উদ্বোধনের পর বারবার সার্ভিস গুটিয়ে নিয়ে এ বিমানবন্দরটি অকেজো রাখার পায়তারা চালানো হয়েছে। ঢাকা-বরিশাল রুটে পর্যাপ্ত যাত্রী থাকলেও বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষ সার্ভিস গুটিয়ে নেওয়ায় এ অঞ্চলের অর্থনীতির জন্য অশনি সংকেত। কেননা দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা সমুদ্রবন্দর, পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা, বরিশাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় এই অঞ্চলে যাত্রীর চাপ রয়েছে। বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন করে আনুষঙ্গিক উন্নয়নের মাধ্যমে নিরাপদ ও যাত্রী বান্ধব করার দাবিও জানান তিনি।
নজরুল ইসলাম রাজন আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় এ সার্ভিস নিয়মিত করতে হবে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা বন্ধ না হলে বিভাগ উন্নয়ন ও স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।