মিজানুর রহমান মুন্সী
বর্তমান রাজনীতিতে বেশিরভাগ নেতাকর্মীরাই নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আর এ সকল নেতাকর্মীদের কারণেই দলগুলো যেমন বিব্রত বোধ করছে তেমন জনগণের কাছে নেতা কর্মিরা আস্থা হারিয়ে ফেলছে।
তাই দলের হাই কমান্ড এখন এ সকল অপরাধের সংবাদ পেলেই তাৎক্ষণিক ভাবে বহিষ্কার আদেশ দিচ্ছেন।
কথায় আছে কম্বলের পশম বাঁছলে কম্বল থাকে না। কম্বল ধুয়ে ব্যবহার করা উচিত। বর্তমান রাজনীতিকে যদি কম্বলের সাথে তুলনা করা হয় তাহলে কোন রাজনৈতিক দলই থাকে না। রাজনৈতিক দলগুলি রাজনৈতিক পরিচয়ে যে দুর্নীতি এবং অপরাধের জড়িয়ে পড়ে তার প্রমাণ স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি জেলে যতগুলি লোক ছিল তা আমার মনে হয় রাজনীতি করা মানুষগুলোই বেশি ছিল।
জেল তৈরি হয় অপরাধীদের জন্য আর রাজনীতি করা হয় জনগণের কল্যাণের জন্য তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমরা বুঝি কল্যাণকার মানুষগুলির জন্য জেল নয়। তারপর প্রশ্ন থেকে যায় ক্ষমতাচ্যুত হলে রাজনৈতিক কর্মীরা কেন জেলে যায়?
ডায়াবেটিকস এটা কোন রোগ নয়। এটা যার হয় সে যদি ভালোভাবে লালন করতে পারে তাহলে জীবনের ঝুঁকি থাকেনা। যে এই ডাইবেটিস কে ভালোভাবে লালন করতে না পারবে তার জন্যই এই ডাইবেটি জীবন নাশের হুমকি হয়ে নানা রোগের উৎপাদন করবে। এবং জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে। তেমনভাবে রাজনীতি করা অপরাধ নয় কিন্তু যদি রাজনৈতিক কর্মীকে আদর্শবান করে গড়ে তুলা না যায় তাহলে দলসহ ভুখন্ডকে খেয়ে ফেলবে শুধু দল এবং রাষ্ট্রকেই খাবেনা জাতিকে ধ্বংস করে দিবে। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সূর্যের আলোর মত সত্য এবং দৃশ্যমান।
রাজনীতি করা লোকগুলি অপরাধে জড়িয়ে পড়লে অপরাধের কারণভিত্তিক দুই ভাগে বিভক্ত করা উচিত। দল করতে গিয়ে সে যদি দলের গঠনতন্ত্রের বহির্ভূত কোন কাজ করে তাহলে দল তাকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত রাখতে পারে।
কোন রাজনৈতিক লোক যদি ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী হয় তাহলে তাকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে ফৌজদারি মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে বিচারের আওতায় আনা জরুরি। সেই বিচারে যদি দলীয় কোন গঠনতন্ত্রের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে দল সিদ্ধান্ত নিতে পারে বহিষ্কার কিংবা সতর্ক।
বর্তমানে রাজনৈতিক পরিচয় যারা সামাজিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন তাদের প্রচলিত আইনে বিচার না করে দল থেকে বহিষ্কার করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করি কারণ তাহলে দল থাকবে না। আগেই তো বলেছি দল একটা কম্বল পশম না বেঁছে ধুয়ে পড়তে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যতগুলি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে এর জন্য মূলত পকেট কমিটি, কমিটি বাণিজ্য দায়ী। লন্ডনে মিথ্যা তথ্য প্রদান এই তথ্যগুলিকে সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করার বা বিশ্বস্ত লোকের অভাবের কারণে আজকে দলের এই করুণ পরিণতি। ৫ তারিখের পর স্থানীয় নেতাদের গ্রুপিং এর কারণে এবং গ্রুপের লোক জুড়ে তাদের শক্তি অর্জন করার জন্য পতিত আওয়ামী লীগের লোক তাদের পাশে নিয়ে গুরুপ ভারি করায় বিভাজন এবং চাঁদাবাজির আবির্ভাব হয়।
বর্তমানে রাজনৈতিক পরিচয় চাঁদাবাজি লুটতরাজ দখলদারিত্ব ধর্ষণ হত্যা চুরি ডাকাত সমাজে সবচেয়ে যে বড় অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে তা সম্পূর্ণটা নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে রাজনৈতিক দলগুলির দায়িত্বশীল ভূমিকা আসতে হবে।
এজন্য যে কাজগুলি করণীয় বা পরামর্শ তা নিম্নরূপ ————————
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জন্য ;
১/ জনাব তারেক রহমানের উচিত হবে আশির দশকের সাবেগ ছাত্র নেতাদের সংগ্রহ করে তার আস্থাভাজন করে নেয়া এবং তাদের পরামর্শ গ্রহন করা।
২/পৃথিবীর বিভিন্ন আনাচে-কানাচে এখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক আদর্শ ছাত্র নেতারা আছেন যাদের কোন প্রকার সার্থ নেই। দীর্ঘদিন যাবত তারা বিনা স্বার্থে জিয়াউর রহমান কে ভালোবেসে বিএনপিকে ভালোবেসে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দলকে সহযোগিতা করেছে।
৩/এই সকল লোককে কখনোই দলের কোন পদ না দিয়ে তার আস্থাভাজন হিসেবে তাদের পরামর্শ নিয়ে দলকে শক্তিশালী করা।
এ ভাবে দেশে প্রবাসে এখনো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং জিয়াউর রহমান প্রেমিক অনেক লোক আছে তাদের সংগ্রহ করে জনাব তারেক রহমান তাদের পরামর্শ নিতে পারেন। তাহলে দেশ বাঁচতে দল বাঁচবে।