ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক এখনো বাংলাদেশের নাগরিক। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে এ তথ্য জানিয়েছেন। যদিও টিউলিপ প্রকাশ্যে তা অস্বীকার করে আসছেন।
দুদকের কৌঁসুলি মোহাম্মদ সুলতান মাহমুদ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই এমপি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও পরিচয়পত্র গ্রহণ করেছেন এবং ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন। তার ঠিকানা, একাধিক পাসপোর্ট এবং ভোটার তালিকায় নাম—সব প্রমাণ আমাদের হাতে আছে, যা সময়মতো আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির মামলায় ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছেন আদালত।
এই মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, টিউলিপ সিদ্দিকের মা শেখ রেহানা, ভাই রাদওয়ান সিদ্দিক ও বোন আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীকে। তাদের বিরুদ্ধে আরো কয়েকটি মামলা রয়েছে।
দুর্নীতির পৃথক ছয় মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩১ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার দুই বিশেষ জজ আদালত।
গত ১১ আগস্ট পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধেও সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।
২০২৪ সালের পাঁচই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ডিসেম্বরে তাদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা করে ছয়টি প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক।
তবে এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি দাবি করেছেন, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মামলার বিষয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সমন পাননি।
দুদকের কৌঁসুলি সুলতান মাহমুদ দাবি করেন, টিউলিপের পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং ভোটার আইডিতে থাকা ঠিকানায় সমন পাঠানো হয়েছিল। “আমাদের টিম একাধিকবার ওই ঠিকানাগুলো পরিদর্শন করেছে এবং যথাসময়ে নোটিশ দিয়েছে,” বলেন তিনি।
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সিটি মিনিস্টারের (ইকোনমিক সেক্রেটারি) পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। আর্থিক খাতে দুর্নীতি রোধের দায়িত্বে থাকা অবস্থা অভিযোগ ওঠে—আওয়ামী লীগসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে তিনি সুবিধা নিয়েছেন। পরে রাজনৈতিক চাপের মুখে তিনি পদ ছাড়েন।