প্রথমে বাংলাদেশ। তারপর ইন্দোনেশিয়া। এখন নেপাল। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের সর্বশেষ সরকারবিরোধী বিক্ষোভে কেঁপে উঠল হিমালয়ের দেশটি। এসবের নেতৃত্বে বেশিরভাগই তরুণ।
নেপাল সরকার ফেসবুক, এক্স এবং ইউটিউবসহ কয়েক ডজন সোশ্যাল-মিডিয়া পরিষেবা নিষিদ্ধ করার পর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে আসে।
কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। কিন্তু ক্ষতি যা হওয়ার হয়ে গেছে – বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ১৯ জন নিহত এবং শত শত আহত হয়। এরপর আন্দোলন তীব্র হয় এবং প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেন।
প্রতিবাদ আন্দোলনগুলো স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে প্রজ্বলিত হলেও প্রায়শই জ্বালানির ‘বিশাল ভাণ্ডার’ সামনে চলে আসে। নেপালের ক্ষেত্রে জ্বালানি, অর্থাৎ অভিযোগগুলোর মধ্যে দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব ছিল।
ইন্দোনেশিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের ঢেউ তোলার মাত্র কয়েকদিন পর নেপালের বিক্ষোভ শুরু হয়। জাকার্তায় আইন প্রণেতাদের জন্য ৩০০০ ডলারের আবাসন ভাতা থেকে এর সূত্রপাত হয়। সেই অস্থিরতা অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার শাসক শ্রেণীর দুর্নীতি এবং দায়মুক্তির বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর আন্দোলনে পরিণত হয়।
এছাড়া গত বছরই তরুণ বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশজুড়ে সমাবেশ করেছিল, যার পরিণতিতে দীর্ঘদিনের নেত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ঘটে।
কোন আঞ্চলিক আন্দোলন চলছে?
তিনটি দেশেই আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন তরুণরা- যারা অর্থনৈতিকভাবে হতাশ এবং দুর্নীতি ও অভিজাতদের সুযোগ-সুবিধার ওপর ক্ষুব্ধ।
নেপালের বিক্ষোভ ‘জেন-জি প্রতিবাদ’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে, যার আংশিক কারণ হলো তথাকথিত ‘নেপো কিডস সমাজ’-এর সম্পদের পাহাড় ও সুযোগ-সুবিধা।
নেপাল সহিংস অভ্যুত্থানের সঙ্গে অপরিচিত নয়। কারণ এক দশক ধরে চলা মাওবাদী বিদ্রোহের শিকার হয়েছে দেশটি। ওই বিদ্রোহে ১৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয় এবং ২০০৮ সালে রাজতন্ত্রের বিলুপ্তি ঘটে।
সরকারের পিছু হটা এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রস্থান বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার জন্য যথেষ্ট হবে কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
তবে এটি নিশ্চিতভাবে বলা যায়, এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের তরুণরা এখন ক্ষুব্ধ এবং পরিবর্তনের দাবিতে মুখর।
তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ