ফররুক আহমেদ এর লেখা কবিতা “পাঞ্জেরি” আজকের লেখার শুরুটা কবিতার প্রথম কয়েক লাইন দিয়ে।——
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
এখনো তোমার আসমান ভরা মেঘে?
সেতারা, হেলার এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি ভুলে;
অসীম কুয়াশা জাগে শূন্যতা ঘেরি।
রাত পোহাবার কত দেরি পাঞ্জেরি?
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনপ্রিয়তার শীর্ষে।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া দলের দায়িত্বশীল ভুমিকায় আপোষহীন নেত্রী হিসাবে খেতাব লাভের পর তার পুত্র দীর্ঘদিন নির্বাসনে থেকেও দলকে সুসংহত রেখে নিজেকে নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বাংলাদেশের মানুষ তাকে জিয়ার ফটোকপি ভেবেই দলের প্রতি আনুগত্য লাভ করেছেন।
সতেরো বছরে দলের এবং দলের নেতা কর্মিদের উপর এমন কোনও নির্যাতন ষড়যন্ত্র হয় নাই যা একটা দল শেষ হয়ে যাবার বাকি থাকে। তার পরেও জনাব তারেক রহমানের মেধা বুদ্ধি সহনশীলতা ধৈর্য প্রজ্ঞায় দলের অবকাঠামো উন্নয়ন সহ সকল কিছুতে পরিপুর্নতা লাভ করে।
নির্বাসিত জীবনে প্রবাস লন্ডনে বসে ফ্যাসিবাদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দেশ বাসির প্রসংসা কুড়িয়েছেন। তিনি তার মেধা বুদ্ধি আচরনে মার্জিত ভাষায় কথা বলায় দলমত নির্বিশেষে সকলের কাছে দেশ নায়ক খেতাবে পর্যবসিত হয়েছেন।
আমার লেখা ছন্দ দিয়ে বুজাবার চেষ্টা করছি।
প্রথম সকাল যেমন দেখ
সুর্য্য হাসে যত,
বিকালটা তার কেমন যাবে
ভাবনায় রেখ তত।
ফুলের গন্ধ নিবে ভেবে
বৃক্ষ রোপন কর,
ধর্য্য ধারন করলে তুমি
ফুলের ফলে বাগানটাই ভরো।
সকাল হবে তাই বলে আমার আনন্দে আত্মহারা হলে চলবে না,বিকেলটা গড়াতে হবে । বিকেলের অস্তমিত সুর্যের আলো সন্ধ্যায় মিশে গেলে দিনের হিসাব মিলাতে সহজ হয়। বাগানে চারা রোপন করে ফুলের ঘ্রান নিয়ে গাছ উপরে না ফেলে ফলের অপেক্ষায় থাকতে হবে তা হলেই কৃষাণীরা উৎপাদনে সফলতার পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করবে।
রাজনীতি করে ফসল নিতে হলে ধর্যের পরীক্ষায় বার বার অবতির্ন হতে হয়। না হয় ফসল বিহীন শূন্য কৃষাণের ভাগ্য বরণ করতে হয়।
বাংলাদেশে যতগুলো দল আছে তার প্রায় সকল দলই ভারত এবং পাকিস্তানের দাসত্বে বিশ্বাসী।
একাত্তরে জামাতের ভুমিকায় রাজাকার নামে গালি দেয়া হয়। আর একাত্তরের পরবর্তী আওয়ামিলীগকে ভারতের দালাল বলা হয়। কিন্তু সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বি এন পি জাতীয়তাবাদে দালালী কিংবা রাজাকারি করে নাই। তাই দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বৃহৎ অংশ এই দলকে পছন্দ করে এবং দেশের জনগন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দলের কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব ভার দিয়েছে।
জিয়াউর রহমানের আদর্শিক দল বি এন পি বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান ছাড়া পরিচালনায় ছিল অনিরাপিদ। দালাল আর অর্থলোভিদের কারনে বার বার বিতর্কিত অবস্থানে দলকে কলুষিত করেছে।
দুই হাজার আট এ ক্ষমতাচ্চুত হবার পর এ দলের পরগাছারা জিয়া পরিবারের সাথে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। মাইনাস টু ফরমুলাকে ষ্টাবিলিস করার ষড়যন্ত্রে তরুন নেতা তারেক রহমানকে দেশত্যাগ করতে বাধ্য করে। বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে পুরে গৃহহারা করে মেডিক্যাল কিলিং করার চেষ্টা করা হয়। এত কিছু চড়াই উতরাই সতেরো বছরে ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে RAW এর ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ছাত্র জনতার আন্দোলনে দালাল আওয়ামিলীগ পরাহত করে সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনে।
আজ আমাদের এই সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জাতীয় ঐক্যের গুরুত্ব অপরিসীম। সে ঐক্য ধরে রাখায় তারেক রহমান নিরলস পরিশ্রম করে নিজের দলের দালালদের কারনে “তুমি মাস্তলে আমি দাড়ঁ টানি ভুলে” কবিতার লাইনে পরিনত হয়েছে।
ঢাকার উত্তর পারা কচুখেত থেকে RAW স্ক্রিপ্টে নির্মান করা রাজনৈতিক নাটক আর সেই নাটকের খল নায়কের ভুমিকায় থাকেন এই দলের কতগুলো অর্থলোভি দালাল।তারা রাজনীতির নামে দলকে ব্যাবহার করে জনগনের আই ওয়াস করে এক এগারোকে প্রতিষ্ঠা করায় ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়নে আওয়ামিলীগকে পুনর্বাসনে ব্যস্ত।
জুলাই আগষ্টের ছাত্র জনতার আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হয় নাই। ছাত্র জনতার নেতৃত্বে তারা ঐক্য বদ্ধ হয়ে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়ে এবং স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে.।
বাংলাদেশের একমাত্র দল বি এন পি দীর্ঘ সতেরো বছর গনতন্ত্রের প্রধান শর্ত ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ফ্যাসিবাদের রোশনালের শিকার হয়েছেন।
মুল বি এন পি তিন ধারায় বিভক্ত বলেই অনেকে মনে করেন। এই বিভক্তির একটা গ্রুপ সংস্কারের রক্ত নিয়ে মাইনাস টু ফরমুলায় দালালির পথ বেছে নিয়েছে।এরা বি এন পি দলকে সাইনবোর্ড বানিয়ে কখনো কখনো আওয়ামিলীগ এবং ইন্ডিয়ার RAW এর সাথে দলিয় অভ্যন্তরীণ বিষয় শেয়ার করছে।
বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের উচিৎ হবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার অপপ্রচার না করা। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল আচরণ অপরিহার্য। দেশের অভ্যন্তরে কামড়াকামরি না করে বিদেশি শত্রুর মোকাবেলা করা এই মুহূর্তে জরুরী।
বিদেশি বলতে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের আগ্রাশন ঠেকাতে আমাদের এই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রে দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদ দেশ থেকে পালিয়ে সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন আর সেখানে বসে নানা ষড়যন্ত্র তাদের আগ্রাসনি এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। অতএব অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিরোধ না ঠেকাতে পারলে দেশ বিপদগ্রস্ত হবে।
বাংলাদেশে যারা দলের দায়িত্বে আছেন তাদের চাঁদাবাজ কমিটি বাণিজ্য দখল ধর্ষণ খুন এগুলি থেকে দূরে থাকতে হবে। অশুভ চক্র এদলের নামে সব কাজে জড়িয়ে পড়লে প্রতিবাদ করতে হবে। আত্ম সমালোচনার মধ্যে দিয়ে এদের প্রতিহত করতে হবে। দল টিকলে আপনি টিকবেন, আপনি টিকলে দলের আদর্শে দেশকে গড়তে পারবেন দেশ গড়তে গিয়ে দেশপ্রেম জাগ্রত করে সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারবেন।