মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকানি নাসির উদ্দিন মাতুব্বরের বাড়িতে অনশন করছেন এক তরুণী। প্রেমিকের সাথে পাঁচ বছরের সম্পর্কের পরও বিয়েতে অনীহা দেখানোয় প্রেমিকার এই অনশন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী তরুণীর দাবি, ২০২১ সালের ১০ জুন কমলাপুর বাজারে নাসিরের মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে ফোন মেরামত করতে গিয়েই তাদের পরিচয়। সেখান থেকেই শুরু হয় প্রেমের সম্পর্ক। দুজনে কুয়াকাটাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান এবং তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
পরবর্তীতে জীবিকার তাগিদে সৌদি আরবে চলে যান তরুণী। দেশে ফিরে বিয়ের প্রস্তাব দিলে প্রেমিক নাসির উদাসীনতা দেখাতে থাকেন এবং একপর্যায়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে হতাশ হয়ে প্রেমিকা সরাসরি প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, প্রেমিকার অনশনের খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসীর ভিড় জমে নাসিরের বাড়িতে। অনেকে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করছেন। এলাকায় একাধিকবার সালিশ হলেও এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।
অনশনে থাকা তরুণী বলেন, নাসির আমাকে বিয়ে না করলে আমি আত্মহত্যা করব। আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। ও আমার কাছ থেকে সব ডকুমেন্টও নিয়ে গেছে। যতক্ষণ না নাসির আমাকে বিয়ে করে, আমি এই বাড়ি থেকে যাব না।
তবে নাসিরের বাবা খলিল মাতুব্বর অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার ছেলের সাথে মেয়েটির কোনো সম্পর্ক নেই। সে দেড় মাস আগে বিদেশে গেছে। ৫ বছর প্রেম করছিল, অথচ ঘোরাঘুরি বা সম্পর্কের কোনো প্রমাণ নেই। তাহলে কীভাবে আমি মেনে নেব যে, সে আমার ছেলের স্ত্রী হতে চায়?
এ বিষয়ে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাতক চাকমা বলেন, ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। প্রেমিকার অনশন নিয়ে যদি নির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, তাহলে ভুক্তভোগী চাইলে আইনি সহায়তা পেতে পারেন। থানা পুলিশ সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
এ ঘটনাকে ঘিরে এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ মেয়েটির প্রতি সহানুভূতি জানালেও, কেউ আবার ঘটনার সত্যতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
প্রেমভাঙনের এমন নাটকীয় পরিণতি যেন আবারও প্রমাণ করল, ভালোবাসা যখন প্রতারণায় রূপ নেয়, তখন তা সামাজিক অস্থিরতা ও মানবিক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। এখন দেখার বিষয়—আইনি পদক্ষেপে ঘটনার কী পরিণতি ঘটে।