শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটা ইউনিয়নের ১৫১ নম্বর উত্তর মাথাভাঙা মান্নান সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি পদ্মা নদীতে ভেঙে পড়েছে। নিশ্চিহ্ন হয়েছে বিদ্যালয়ের ৩০ শতাংশ জমি। একমাত্র ভবন নদীগর্ভে ভেসে যাওয়ায় বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ। গত সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে ভবনটির একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়ে।
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার কাচিকাটি ইউনিয়ন পদ্মা নদীর চরে অবস্থিত। ইউনিয়নটির একদিকে মুন্সিগঞ্জ ও অন্যদিকে চাঁদপুর জেলা। এলাকাটির চার দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত হয়েছে। গ্রামটিতে পূর্বে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিলনা।
২০১৭ সালে গ্রামটিতে এই প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। পরের বছর ২০১৮ সাল থেকে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।
সোমবার বিকেলে একতলা পাকা ভবনের ৪টি কক্ষে পাঠদান কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে বিদ্যালয় ভবনের একটি অংশ নদীতে ভেঙে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও শিক্ষকরা জানান, ২০২৩ সালে বিদ্যালয়টি পদ্মার ভাঙনের ঝুঁকিতে পরে। তখন পানি উন্নয়ন বোর্ড সেখানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এবছর জুন মাসে সেই বালুর বস্তা নদীতে বিলীন হয়ে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন বিদ্যালয় ভবনটি রক্ষার কোন উদ্যোগ নেয়নি।
গত ৪ সেপ্টেম্বর হতে ভাঙনের কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আল মামুন বলেন, বিদ্যালয়ের সকল জমি ও ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভবন ভাঙনের আগে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এখন কোথায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম চালু করা হবে তা বলতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তাদের নিদের্শনা অনুযায়ী পরবর্তি পদক্ষেপ নেইয়া হবে। আপাতত পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আল মুজাহিদ বলেন, ‘বিদ্যালয় ভবনটি ভাঙনের কবলে পরার কারনে আপাতত পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয়ের মালামাল সরিয়ে নেয়া হয়েছে।বিদ্যালয়ের জমি দাতা অন্য একটি স্থানে জমি দিতে রাজি হয়েছেন, অল্প সময়ের মধ্যে সেখানেই বিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হবে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু আব্দুল্লাহ খান বলেন, বিদ্যালয় ভাঙনের কবলে পড়ার কারনে উপজেলা পরিষদের একটি সভা হয়েছিল। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য চিঠি দেয়া হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। আমরা শীঘ্রই এর কার্যক্রম অন্যত্র শুরু করার ব্যবস্থা নেব।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান বলেন, কাচিকাটা এলাকায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার নদীর তীর রক্ষা বাঁধ নির্মানের একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রনায়য়ে জমা দেয়া হয়েছে। সেটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। যার কারনে বিদ্যালয়টির জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।